বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
আবদুল আজিজ:
প্রিয় পাঠক, শিরোনাম আর লেখার পার্থক্য খুঁজে না পেয়ে চমকে উঠবেন না। কারণ, মায়ের গর্ভ থেকে একটি নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর যেভাবে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে, ঠিক একটি প্রতিষ্ঠান তথা কক্সবাজার ভয়েস ডট কম নিউজ পোর্টালটি আজ বেড়ে উঠছে সেভাবে। আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল ‘সত্য আমাদের শক্তি’ স্লোগান নিয়ে পোর্টালটি নবজাতক হিসাবে জন্ম নেয়। এরপর ধীরে ধীরে নিজের স্বকীয়তায় বেড়ে উঠতে শিখছে। শুরু থেকে সত্যকে শক্তি হিসাবে বেড়ে উঠায় কক্সবাজার ভয়েস ডট কম সত্যকে বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। কক্সবাজার ভয়েস এখন নবজাতক থেকে কথা বলতে শিখেছে। তাই, সামনের সিঁড়ি গুলো পার হতে চাই সত্যকে সত্য, মিথ্যাকে মিথ্যা বলার মধ্যদিয়ে। এজন্য দরকার সকলের আন্তরিক সহযোগিতা।
কক্সবাজার ভয়েস আজ শুধু কক্সবাজার নয়, দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী সচেতন পাঠকের মনে স্থান করে নিতে শুরু করেছে। আমি বলবো না নবজাতকটি বড় হয়ে গেছে, তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বড় হয়ে উঠবে। কথা বলবে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র নগরী কক্সবাজারের মানুষের। কথা বলবে নির্যাতিত নিষ্পেষিত ও অসহায় দুর্বল মানুষের। দেশ- মাটি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে। এজন্য শত বাঁধা অতিক্রম এগিয়ে যেতে চাই কক্সবাজার ভয়েস।
আমার ক্ষুদ্র সাংবাদিকতায় মনে হয়েছে আমাদের মাতৃভূমি কক্সবাজারে অনলাইন সাংবাদিকতা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ঝাঁকে ঝাঁকে সাংবাদিক তৈরী হলেও বাড়েনি সাংবাদিকতার মান। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে নবজাতক শিশুদের মতো জন্ম হয়েছে কক্সবাজার ভয়েস ডট কমের। আমরা বলবো না যে এই মুহুর্তে অনলাইন সাংবাদিকতার মান পাল্টে দিতে পারবো। তবে সৃজনশীল অনলাইন সাংবাদিকতার মান বাড়াতে সচেষ্ট থাকবো। কারণ, আমাদের সঙ্গে রয়েছে সাংবাদিকতার শিক্ষক সবার প্রিয় ও বিশিষ্ট সাংবাদিক আবু তাহের। একই সাথে রয়েছে আরেক সাংবাদিকতার কারিগর বিশিষ্ট কলামিষ্ট, গবেষক ও পরিবেশবিদ বিশ্বজিত সেন। এছাড়াও সাথে রয়েছে অনেকেই। কক্সবাজার ভয়েস মুলত: এসব বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়েই সাহস করেছে সাংবাদিকতার মানোন্নয়নে।
আমি যতটুকু জানি বাংলাদেশে অনলাইন সাংবাদিকতা শুরু হয় ২০০৪ সালে। যা বিশ্বের চেয়ে ১৫ বছর পরে। অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী অনলাইন সাংবাদিকতার ১৫ বছর পরে বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় প্রথম যুক্ত হন অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ২৪.কম। বিশিষ্ট সাংবাদিক আলমগীর হোসেন ছিলেন এর প্রধান সম্পাদক ও অন্যতম উদ্যোক্তা (মোবাইল যুগে সাংবাদিকতা)। তবে, ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে বিডিনিউজের মালিকানা কিনে নেন বিবিসি’র সাবেক সাংবাদিক তৌফিক ইমরোজ খালিদী। এখান থেকেই বোঝা যায় আমাদের দেশের সংবাদপত্রগুলো কতটুকু স্বচ্ছল। এভাবেই বাংলাদেশে অনলাইন সংবাদপত্রের পথচলা শুরু হয়। এখন বর্তমানে দেশে হাজার হাজার অনলাইন নিউজ পোর্টাল আত্মপ্রকাশ করেছে। টিকে থাকার প্রতিযোগিতায় অনেকেই শুরু করেছে অপসাংবাদিকতা। এক্ষেত্রে আমাদের কক্সবাজারও পিছিয়ে নেই। যত্রতত্র অনলাইন নিউজ পোর্টাল খুলে কক্সবাজারের সাংবাদিকতাকে নিয়ে গেছে তলানিতে। দেশের বড় মিডিয়া হাউস গুলোতে কাজ করার সুবাধে আমি বুঝতে পেরেছি সাংবাদিকতার মান এখন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। আবার অনেকেই নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে নিরবে। অবশ্য, অনলাইন সাংবাদিকতার প্ল্যাটফর্ম তৈরী করতে গিয়ে চ্যালেঞ্জও বাড়ছে।
গত এক বছর আগে যখন কক্সবাজার ভয়েস অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে, তখন আমার জন্য ছিল বেশী চ্যালেঞ্জিং। একদিকে আমার সহধর্মীনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া, অন্যদিকে কক্সবাজার ভয়েসের সামান্যতমও হাল ধরতে কোন সহকর্মী খুঁজে না পাওয়া। আমি দেখেছি আমার অনেক সহকর্মী রয়েছে কোন টাকা পয়সা ছাড়াই বিনাশ্রমে ঢাকায় নামে বেনামে গড়ে উঠা বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। অথচ, কক্সবাজার ভয়েস এসব সহকর্মীদের শ্রমের মূল্য দেয়ার চেষ্টা করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। ধরেনি কক্সবাজার ভয়েসের হাল। দেখায়নি কোন আগ্রহ। বরং বিভিন্ন কাঁদা ছোড়ে দিয়ে কক্সবাজার ভয়েসের অগ্রযাত্রাকে বাঁধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে। আজ এক বছরের মাথায় সেসব সহকর্মীদের অনেকেই কক্সবাজার ভয়েসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এসব কিছু সম্ভব হয়ে উঠছে সম্মানিত পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের ভালবাসায়। তাদের এই ভালবাসা আমাকে কক্সবাজার ভয়েসকে সামনে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখায়। দেখায় বেঁচে থাকার প্রেরণা।
লেখক-প্রকাশক, কক্সবাজার ভয়েস ডটকম
মেইল-azizcox2011@gmail.com